কয়েক বছর পর…

এক

মহামারী এখন প্রায় কেটে গেছে। হাতেগোনা কয়েকটা বাস, অটো চলতে শুরু করেছে। বনগাঁ লোকালেও আর আগের মতো ভীড় নেই। এই প্রথমবার দেখা গেল দোকানগুলোতে মানুষের থেকে মাস্ক আর স্যানিটাইজারের লাইন বেশি।

দুই

প্রতিটি হাসপাতালে আজ রোগীর থেকে অ্যাম্বুলেন্সের সংখ্যা তুলনামূলক ভাবে অনেক। হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া স্বামীকে তার স্ত্রী অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেওয়ার পর লক্ষ্য করলো তাতে লেখা ছিল ‘এখানে চব্বিশ ঘন্টা শবদেহ পরিবহণ করা হয়’।

অ্যাম্বুলেন্স কে আর থামাতে পারলোনা কারন সে জানতো ‘ পেছন থেকে আর ডাকতে নেই। যে যাওয়ার তাকে যেতে দিতে হয়’।

তিন

এখন সারাজীবনের জন্য রেশন ফ্রি করে দিয়েছে সরকার। মানুষের থেকে রেশন সামগ্রী বেশি করে আসছে। এক ভদ্রলোক প্রাইভেট কার এ এসে রেশন নিয়ে গেলেন। দোকান বন্ধ করার সময় ডিলার দেখলেন রাস্তা তে শুয়ে থাকা বাচ্চাটি তখনও ভ্যাট থেকে তার পছন্দের খাবার টি খোঁজার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে।

চার

ব্যবসা প্রায় লাটে উঠেছে। দেশে বেকারের সংখ্যা আরও বেড়েছে । ভোট চাইতে আসা কোনো নেতা শেষ আশাটুকু দিয়ে গেলেন যে ক্ষমতায় এলে সবাই মাথাপিছু চাকরি পাবে। (টাকার অঙ্ক টা তখনও স্পষ্টভাবে বলা ছিলনা)

পিশাচ

আগে লিখিনি বলে আজও লিখবোনা
এ কথা ভেবে নিলে, তা তোমার ই ভুল
কলম জীবিত আছে। নিব গুলো গোনা
কালপ্রিটের চৌকাঠে টেকে না কবুল।

দৃষ্টিহীন চোখকে অন্ধ করে ফেলো
শেষবার পরিয়ে দিও পবিত্র পোশাক
কামবিদ্ধ মন রেখে বাঁচে যে লোক –
তাকে যদি মরতে হয়, মরে তবে যাক।

মৃতাদের কবরের পাশে আমরাও সামিল
লাগোয়া বসতি জুড়ে জ্বলে অন্যের চিতা
অক্ষতভাবে বেঁচে থাকা মেয়েটির দাবি –
তারও জন্য কি লেখা হবে! সামান্য কবিতা?

পিশাচ হয়ে আরেকবার জন্মানোর আগে
আক্রোশ যদি তুমি বাড়িয়ে যেতে পারো –
শিশুদের ওপরও যাদের পুরুষত্ব জাগে
তাদের জন্য ফের কলম চলবে আমারও।